জেলা প্রশাসকের বার্তা
প্রমত্তা পদ্মার অববাহিকায় স্বতন্ত্র মহিমায় দাঁড়িয়ে যে জনপদ তার নাম- রাজবাড়ী। পদ্মা নদীর মায়া বেষ্টিত বলে এ জেলাকে পদ্মাকন্যা বলা হয়ে থাকে। পদ্মা ছাড়াও এখানে হড়াই, গড়াই, চন্দনা নদী বহুল পরিচিত। আবহমান কাল থেকে রাজবাড়ী জেলা নানা সংগ্রাম আন্দোলনের স্বাক্ষী। ফকির বিদ্রোহ, সন্যাসী আন্দোলন, ফরায়েজী আন্দোলন, সিপাহী বিপ্লব, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে রাজবাড়ী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজবাড়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নানা কারণে রাজবাড়ী জেলা গুরুত্বপূর্ণ। শিল্পে, সাহিত্যে, খেলা-ধুলায় রাজবাড়ী জেলা অনন্য। ‘সওগাত’ পত্রিকার সম্পাদক, প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও গবেষক, কাজী আব্দুল ওয়াদুদ, ‘বিষাদ সিন্ধুর’ রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন, স্বনামধন্য সাহিত্যিক ড. কাজী মোতাহার হোসেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী মনসুরুল করিম এর মত ব্যক্তিগণ এ জেলার রত্ন। গানে, গল্পে, কবিতায় এ জেলার উপস্থিতি চোখে পড়ার মত।
রাজবাড়ী জেলা একসময় বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮৪ সালে গোয়ালন্দ মহকুমা ‘‘রাজবাড়ী’’ জেলায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এ জেলা দক্ষিণ বাংলার ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। রেলপথ, নৌপথ ও সড়ক পথে যোগাযোগের সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে এ জেলায়। ‘‘গোয়ালন্দ ঘাট’’ যা আজকের দৌলতদিয়া ফেরীঘাট সেই মুঘল শাসনামল থেকে পরিচিত। বর্তমানে এ ঘাট রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণ বাংলার ২১টি জেলার সংযোগ সাধন করে চলেছে।
অন্যান্য জেলার সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রাজবাড়ী জেলা। জেলা প্রশাসন রাজবাড়ীর রয়েছে নিজস্ব সক্রিয় ওয়েব পোর্টাল, যার মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে রাজবাড়ী সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব। E-mutation, ইলেক্ট্রনিক-পদ্ধতিতে LD Tax আদায়, অনলাইনে পর্চা বিতরণ ইত্যাদি কাজে রাজবাড়ী জেলা অন্য যে কোন জেলা অপেক্ষা অগ্রসর। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদান এবং তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে গঠিত ওয়েব টিম ও ওয়েব সেল কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি প্রধান এ জেলা শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। রাজবাড়ী জেলার উন্নয়নে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।
জেলা প্রশাসক
রাজবাড়ী।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস